দুই দিনেই প্রাণ কেড়ে নিতে পারে মাংসখেকো ব্যাকটেরিয়া
- আপডেট সময় : ০২:১৪:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ জুন ২০২৪ ৭৯ বার পড়া হয়েছে
করোনা ভাইরাসের মত আবার উদ্বেগ ছড়াচ্ছে মাংসখেকো ব্যাকটেরিয়া। ভয়ানক এই মাংসখেকো ব্যাকটেরিয়া বেশি সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়েছে জাপানে। ব্যাকটেরিয়াটি মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় একজন পূর্ণ বয়স্ক সুস্থ মানুষকে মেরে ফেলতে সক্ষম।
দ্য টেলিগ্রাম সংবাদ মাধ্যমে জানা যায়, গ্রুপ এ স্ট্রেপ্টোকোকাস নামের এই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমনে যে রোগটি হয় সেটির নাম হচ্ছে স্টেপ্টোকোকাল টক্সিক সক সিনড্রোম বা এসটিএসএস।
জাপানের জাতীয় রোগ গবেষণা সংস্থা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ইনফেকশন ডিজিজ বিগত প্রায় ২৫ বছর ধরে এই রোগে আক্রান্ত মানুষের বিভিন্ন তথ্যগুলো অনুসন্ধান করছে। ওই সংস্থার তথ্য অনুযায়ী মাংস খেকো ব্যাকটেরিয়া এখন পর্যন্ত জাপানে আক্রান্ত হয়েছে ৯৭৭ জন।
সামনের দিনগুলোতে মাংস খেকো ব্যাকটেরিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শুধুমাত্র গতবছরই এ রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৯৪১ জন। সেই হিসেবে প্রতি বছরই বাড়ছে এসটিএসএসে আক্রান্ত রোগীদের পরিমাণ।
সেই সাথে চলতি বছরে এই ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত রোগের সংখ্যা ২৫০০ তে পৌঁছাতে বলে ধারণা করছেন গবেষকরা।
মাংস খেকো ব্যাকটেরিয়াটির রয়েছে বিভিন্ন রকমের প্রজাতি। তার মধ্যে কিছু কিছু প্রজাতি মূলত শিশু এবং ছোট বাচ্চাদের আক্রান্ত করে থাকে। মাংসখেকো ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হলে প্রথমদিকে শিশুদের গলা ফুলে যায় এবং গলা ব্যথা করে। শিশুদের গলা ব্যাথার এই অবস্থাকে বলা হয় স্ট্রেপ থ্রোট। তবে শিশুদের আক্রান্ত করা এই প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া গুলো প্রাণঘাতী নয় বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
দুই দিনেই প্রাণ কেড়ে নিতে পারে মাংসখেকো ব্যাকটেরিয়া
তবে মাংসখেকো ব্যাকটেরিয়ার আবার কিছু কিছু প্রজাতি রয়েছে যেগুলো আক্রমণ করে মূলত ৫০ বছর বয়সী বা তার অধিক বৃদ্ধ লোকদের। এদের ক্ষেত্রেও সংক্রমনের প্রথম দেখে গলা ব্যথা এবং পরবর্তীতে মাংসপেশিতে ব্যথা করা শুরু হয়। সেই সাথে মাংস খেকো ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে হাত-পা এবং শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ফুলে যায়। প্রেসার লো হয়ে যায় এবং একটা সময় গিয়ে শরীরের মাংস গুলোতে পচন ধরা শুরু করে।
তারপর আস্তে আস্তে শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা হয় এবং বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে পড়ে এবং সবশেষে রোগীর মৃত্যু ঘটে।
জাপানের টোকিও মেডিকেল ইউনিভার্সিটি প্রফেসর কিকুচি ব্লুমবার্গ বলেন, মাংসখেকো ব্যাকটেরিয়ার লক্ষণ গুলি প্রকাশ হওয়ার পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার ভেতরে আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হতে পারে। এরকম হতে পারে যে সকালে রোগীর পা ফুলে গেলো এরপর দুপুরের মধ্যেই সেই ফোলা ভাবটি সারা দেহে ছড়িয়ে পড়েছে।
এখন পর্যন্ত মাংস খেকো ব্যাকটেরিয়ায় যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের ৩০ ভাগই মারা গিয়েছেন।
মাংসখেকো ব্যাকটেরিয়া হাত থেকে রক্ষা পেতে ডাক্তারেরা শরীর সবসময় পরিষ্কার রাখা এবং শরীরের যেকোন আঘাতপ্রাপ্ত স্থান খোলা অবস্থায় না রাখার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন।