এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য আসছে নতুন নিয়ম ও আচরণ বিধি
- আপডেট সময় : ০৩:৪৯:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪ ৭৩ বার পড়া হয়েছে
কিছুদিন আগে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একটি শিক্ষা সফরে বাসের মধ্যেই শিক্ষকদের সাথে মদ পান করে শিক্ষার্থীরা। ঘটনাটি ঘটেছে মাদারীপুরের শিবচরের শিকদার হাট উচ্চ বিদ্যালয়ে। ঠিক সেই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। সেই সাথে শুরু হয় সমালোচনার ঝড়।
ভাইরাল হওয়া সেই ভিডিওতে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের সাথে মদ পান করছেন উক্ত স্কুলের শিক্ষক ওয়ালিদ হোসেন। তার পাশে মদ হাতে কয়েকজন শিক্ষার্থীদেরকে উচ্ছাসও করতে দেখা যায়। ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর স্কুল কর্তৃপক্ষ ২ জন শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেন।
এরকম আরো উদাহরণ রয়েছে। যেমন এর আগে মৌলভীবাজারের শাহবাজপুর হাই স্কুলের একটি অনুষ্ঠানে শিক্ষকের নাচের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। পরে সেটা নিয়ে সমালোচনা হলে সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
কিন্তু এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য নির্দিষ্ট কোন আচরণবিধি না থাকায় এরকম অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। সরকারি শিক্ষকরা যদিও সরকারি আচরণ বিধিমালা ২০১৮ এবং সরকারি আচরণ বিধিমালা ১৯৬৯ মেনে চলে। এর বড়খেলাপ হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া যায়।
কিন্তু সারাদেশে প্রায় ৫ লাখ এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারী রয়েছেন। যাদের আচরণকে কোনো বিধিমালার অধীনে বিবেচনা করা যাচ্ছে না। তাই এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য নতুন আচরণবিধি তৈরি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য আসছে নতুন নিয়ম ও আচরণ বিধি
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কিছু কর্মকর্তা জানান, এর আগে এমপি ভুক্ত শিক্ষকরা ক্লাস ফেলে স্কুল জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলন করে। অনেক শিক্ষক শিক্ষার্থীদেরকে কোচিংয়ে পড়ার জন্য উৎসাহ করেন। যৌন নির্যাতনের ঘটনাও অনেক রয়েছে।
তাই মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর এব্যাপারে খুব শীঘ্রই ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
ঢাকায় শিক্ষা মন্ত্রীর উপস্থিতিতে মাউশির পরিচালক সৈয়দ জাফর আলী ঘোষণা দেন, বেসরকারি এবং এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য নতুন একটি আচরণ বিধি তৈরি করতে যাচ্ছে সরকার। কোন ধরনের অপরাধের জন্য কোন ধরনের শাস্তি হবে সে বিষয়ে ইতিমধ্য আলোচনা হয়েছে। ভবিষ্যতে আরো আলোচনা করার মাধ্যমে বিধিমালাটি চূড়ান্ত করা হবে।
কি কি থাকতে পারে সেই আচরণ বিধিমালায়?
কোন শিক্ষক বা কর্মচারী রাজনৈতিক আন্দোলন, চাঁদা বা এধরনের কোন কাজের সাথে সম্পৃক্ত হতে পারবে না। প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হয় এমন কোন কাজে নিজেকে জড়ানো যাবে না।
প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন ছাড়া টিউশনি পড়ানো যাবে না।
এমপিওভুক্ত শিক্ষক বা কর্মচারীরা এমন কোন বক্তব্য প্রকাশ করতে পারবে না যাতে করে সরকার অস্বস্তিকর অবস্থায় পড়ে। সে ক্ষেত্রে জনমনে বিরোধ সৃষ্টি হয় এরকম কথা বলা যাবে না।
এছাড়াও পেশায় গাফেলতি, বিভিন্ন রকমের দুর্নীতি, অনৈতিক কাজকর্ম ইত্যাদির অপরাধস্বরূপ এমপিওভুক্ত শিক্ষককে বহিষ্কার, বেতন বৃদ্ধি স্থগিত, তিরস্কার সহ নানা ধরনের শাস্তি দেওয়া হতে পারে।
এমপিওভুক্ত শিক্ষক বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে কোনরকম ফৌজদারি বা দেওয়ানি মামলা হলে বিবেচনা সাপেক্ষে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করতে পারবে কর্তৃপক্ষ। এ সময় তিনি বেতনের অর্ধেক টাকা পাবেন। যদি উক্ত মামলায় তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হয় তাহলে বকেয়া বেতন ভাতা সম্পূর্ণ তিনি পাবেন।