কোরবানির ইতিহাস
- আপডেট সময় : ০৫:২১:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ জুন ২০২৪ ৬৭ বার পড়া হয়েছে
আর কিছুদিন পরেই মুসলমানদের সবচাইতে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহা। কিন্তু ঈদুল আযহা উপলক্ষে কোরবানির ইতিহাস সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। কখন থেকে কুরবানী দেওয়ার রীতি চালু হয় বা কেন হয় সে সম্পর্কে জানাতে আজকে আমাদের এই লিখাটি।
কোরবানির ইতিহাস
হযরত আদম (আ.) এর যুগ থেকেই কোরবানি ইতিহাস শুরু হয়েছে। তারপর থেকে পরবর্তী সকল নবীগণের উপরেই কোরবানির বিধান ছিল। তবে বিভিন্ন নবীগণের উপর কোরবানির বিধান বিভিন্ন রকম ছিল। তারপর থেকে শেষ কেয়ামত পর্যন্ত এই বিধান চালু থাকবে। আমরা কোরবানির যে বিধানটি পালন করে সেটি আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) এবং কুরআনের মাধ্যমে এসেছে। তবে কোরবানীর শুরুটা এসেছে হযরত ইব্রাহিম (আ.) এর সময় থেকে।
কোরবানির ইতিহাস সম্পর্কে সাহাবারা রাসুল (সা.) কে প্রশ্ন করেছিলেন। তখন এর উত্তরে তিনি বলেন, এটি তোমাদের পিতা ইব্রাহিম (আ.) এর সুন্নত। (মিশকাত, ইবনে মাজাহ)
আমরা আল্লাহর নামে যে কোরবানী করি সেটি মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে দান করেছেন হযরত ইব্রাহিম (আ.) এর পুত্র ইসমাইলের সাথে সংঘটিত কোরবানির পরীক্ষা থেকে।
আমরা জিলহজ মাসের ১০,১১ এবং ১২ তারিখে যে কোরবানি দিয়ে থাকে সেই কুরবানীর ইতিহাস ঘটনাটি হলো,
প্রথম কোরবানি অনুষ্ঠিত হয় হাবেল এবং কাবিলের মাধ্যমে। তখন কোরবানির পদ্ধতিটি একটু ভিন্নরকম ছিল। তখন যার কোরবানি ঠিক কবুল হতো আকাশ থেকে অগ্নি শিখা এসে তার পশু কে জ্বালিয়ে দিতো।
ইব্রাহিম (আ.) এর যুগ থেকে যে কোরবানির ইতিহাসটির ঘটনাটি হলো,
কোরবানির ইতিহাস
ইব্রাহিম (আ.) ছিলেন সন্তানহীন। তাই তিনি একটি নেক সন্তানের আশায় মহান আল্লাহতালার কাছে সব সময় দোয়া করতেন। অবশেষে তার দোয়া কবুল হয়। তার একটি পুত্র সন্তান জন্ম হয় যার নাম ইসমাইল। ইসমাইল যখন কিছুটা বড় হলেন তখন হযরত ইব্রাহিম (আ.) কে এক কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হল।
ইব্রাহিম আলাই সাল্লাম তার প্রিয় পুত্র ইসমাইলকে এই ঘটনার ব্যাপানে বললেন, আমি স্বপ্নে তোমাকে জবাই করতে দেখেছি। ইসমাইল এর প্রতি উত্তরে বললেন, হে পিতা, মহান আল্লাহ তায়ালার দ্বারা যা নির্দেশিত শুধু আপনি তাই পালন করুন। নবীগণের স্বপ্ন যেহেতু ওহী এবং নির্দেশিত তাই এটি অবশ্যই আল্লাহ তাআলার হুকুম। আর এটি জেনেই ইসমাইল তার পিতা ইব্রাহিম (আ.) কে নিজেকে কোরবানি করতে বলেস। ভবিষ্যতে যেহেতু ইসমাইল নবুওয়্যাত লাভ করবেন তাই এ সময়ই তিনি নবী সুলভ আচরণ করেন।
তাই পুত্র ইসমাইলকে কুরবানী করার উদ্দেশ্যে ইব্রাহিম আলাই সালাম তাকে নিয়ে মিনার প্রান্তরে রওনা দিলেন। কোরবানির ইতিহাস থেকে আমরা জানতে পারি পথে যাত্রাকালে শয়তান তাদেরকে তিনবার ধোঁকা দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু প্রতিবারই ব্যর্থ হয়।
তারপর সব প্রস্তুতি শেষকালে ইব্রাহিম আলাই সাল্লাম যখন তার ছেলে ইসমাইল এর গলায় ছুরি চালালেন ঠিক তখনই আল্লাহর পক্ষ থেকে ওহী নাযিল হলো। ঠিক সে সময় ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম আসমানে ডাক শুনতে পেয়ে উপরের দিকে তাকিয়ে দেখেন জিব্রাইল (আ.) একটি জান্নাতি দুম্বা বানিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। তারপর তিনি তার ছেলে ইসমাইলের পরিবর্তে দুম্বা কোরবানী করলেন এবং সেখান থেকেই আমাদের কোরবানির ইতিহাস শুরু।
মহান আল্লাহ তা’আলা এভাবেই তার নির্দেশ পালনের প্রতিদান দিয়ে থাকেন। হযরত ইব্রাহিম (আ.) এর কোরবানি আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয় তাই তো তিনি আমাদের উপরেও কোরবানির বিধান দিয়েছেন।
কোরবানির ইতিহাস থেকে আমরা এটা অবশ্যই বুঝতে পারি যে কোরবানির শুধুমাত্র গোশত খাওয়ার উদ্দেশ্যে নয়। এটি মূলত মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে দেওয়া হয়ে থাকে।
সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে এখানে প্রবেশ করুন।