ঢাকা ০৮:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মক্কায় মসজিদের নকশা করেও যিনি ১ টাকা নেননি সৌদি বাদশার থেকে

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৫:৩৩:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ জুন ২০২৪ ৭০ বার পড়া হয়েছে

মক্কায় মসজিদের নকশা করেও যিনি ১ টাকা নেননি সৌদি বাদশার থেকে

আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

প্রকৌশলী মোঃ কামাল ইসমাইলের জন্ম ১৯০৮ সালে। যিনি তৎকালীন সময়ে মক্কার মসজিদ আল-হারাম ও আনা-নাবাওয়ি মসজিদের ডিজাইন করেন এবং পুনরায় নির্মাণ করেন। কিন্তু পারিশ্রমিক হিসেবে ১ টাকাও নেননি।

প্রকৌশলী কামাল ইসমাইল মিশরের একটি হাই স্কুল থেকে সবচাইতে কম বয়সে অনার্স সম্পন্ন করেন এবং সবচাইতে কম বয়সে লন্ডনের রয়েল কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে পড়াশোনা শেষ করেন।

পড়াশোনা শেষ করে কামাল ইসমাইল ইউরোপে চলে যান ইসলামিক স্থাপত্য শিল্প সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানার জন্য।

তিনি সর্বপ্রথম প্রকৌশলী হিসেবে হারমাইন শরীফাইনের সব রকম ডিজাইন এবং পুনরায় নির্মাণের জন্য দায়িত্ব পান।

কিন্তু এত সকল কাজ করার জন্য দীর্ঘ অভিজ্ঞতা এবং অসাধারণ দক্ষতার প্রয়োজন। সেই সাথে প্রয়োজন অনেক সময়। কিন্তু মোঃ কামাল ইসমাইল এত পরিশ্রম করেও কোন পারিশ্রমিক নেননি।

এমনকি তখনকার রাজা ফাহাদ এবং বিন লাদেন চেষ্টা করেও তার তৈরি নকশা এবং নির্মাণ কাজের জন্য এক পয়সাও তাকে দিতে পারেনি।

এ ব্যাপারে মক্কার মসজিদ নকশার প্রকৌশলী কামাল ঈসমাইল বলেন, ” আমি কি জন্য পৃথিবীর সবচাইতে পবিত্র জায়গায় কাজ করার জন্য টাকা কিংবা পয়সা নিব। তাহলে আমি শেষ বিচারের দিনে আল্লাহকে কি জবাব দেব?

মোঃ কামাল ইসমাইলের পুরো জীবনে তিনি আল্লাহর প্রতি ভরসা এবং বিশ্বাস রেখেছিলেন। তিনি সবসময় তার ব্যক্তিগত বিষয় গুলোকে গোপন রাখতে পছন্দ করতেন। সেজন্য তিনি দিনের বেশিরভাগ সময় আল্লাহ তায়ালার ইবাদত করে কাটাতেন।

আরোও মজার ব্যাপার হচ্ছে তিনি যখন মক্কার মসজিদ আল হারাম ও মসজিদ আন-নাবাওয়ি ডিজাইন এবং রিস্ট্রাকচারের কাজ শুরু করেন তখন তার বয়স ইতিমধ্যে ৮০ পার হয়ে গেছে।

মক্কায় মসজিদের নকশা করেও যিনি ১ টাকা নেননি সৌদি বাদশার থেকে

তিনি তার বাকি জীবন এত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে কাটিয়ে দেন এবং সেটা সম্পর্কে গণমাধ্যম কিছুই জানে না।

মোহাম্মদ কামাল ইসমাইল বিয়ে করেন ৪০ বছর বয়সে। তার স্ত্রী একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেওয়ার পরে মারা যান। স্ত্রী মারা যাওয়ার পরে মোহাম্মদ কামাল ইসমাইল কখনো বিয়ে করেননি। তিনি ১০০ বছর বয়স পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন।

মসজিদ আল-হারাম ও আন নাবাওয়ির অসাধারণ নির্মাণে যে উপাদান গুলো ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলো ছিল খুবই দুষ্প্রাপ্য বস্তু।

আপনি যদি কখনো এই জায়গায় গিয়ে থাকেন তাহলে দেখবেন সৌদি আরবের তাপমাত্রা যত বেশি থাকুক না কেন আল হারাম মসজিদের মেঝে স্পর্শ করলে সেটি ঠান্ডা অনুভূত হয়।

এর কারণ হচ্ছে এতে সাদা মার্বেল ব্যবহার করা হয়েছে। এই স্নো হোয়াইট মার্বেল খুবই দুষ্প্রাপ্ত এবং সেটি আনা হয় লেবানন থেকে।

মক্কার মসজিদ নির্মাণের জন্য ডঃ কামাল ইসমাইল গ্রিস থেকে আরেকটি দুর্লভ মার্বেল পাথর আনেন। যেটি কিনার সাধারন সাদার চাইতে অনেক বেশি উজ্জ্বল। সেই সাথে গরম আবহাওয়ায় ঘর অনেক ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। সৌদির বাদশা মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু সময় এই স্নো হোয়াইট মার্বেল পাথর ব্যবহার করতে বলেন।

মসজিদ আল-হারাম ইসলামের অন্যতম পবিত্র স্থান। সাধারণ সময়ে এখানে প্রায় ৮ লক্ষ ২০ হাজার মুসলমানকে স্থান দেওয়া সম্ভব হয়। তবে হজের সময় এখানে ১০ লাখেরও বেশি মুসল্লি একত্রিত হতে পারে।

দুই দিনেই প্রাণ কেড়ে নিতে পারে মাংসখেকো ব্যাকটেরিয়া। বিস্তারিত জানতে এখানে প্রবেশ করুন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

মক্কায় মসজিদের নকশা করেও যিনি ১ টাকা নেননি সৌদি বাদশার থেকে

আপডেট সময় : ০৫:৩৩:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ জুন ২০২৪

প্রকৌশলী মোঃ কামাল ইসমাইলের জন্ম ১৯০৮ সালে। যিনি তৎকালীন সময়ে মক্কার মসজিদ আল-হারাম ও আনা-নাবাওয়ি মসজিদের ডিজাইন করেন এবং পুনরায় নির্মাণ করেন। কিন্তু পারিশ্রমিক হিসেবে ১ টাকাও নেননি।

প্রকৌশলী কামাল ইসমাইল মিশরের একটি হাই স্কুল থেকে সবচাইতে কম বয়সে অনার্স সম্পন্ন করেন এবং সবচাইতে কম বয়সে লন্ডনের রয়েল কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে পড়াশোনা শেষ করেন।

পড়াশোনা শেষ করে কামাল ইসমাইল ইউরোপে চলে যান ইসলামিক স্থাপত্য শিল্প সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানার জন্য।

তিনি সর্বপ্রথম প্রকৌশলী হিসেবে হারমাইন শরীফাইনের সব রকম ডিজাইন এবং পুনরায় নির্মাণের জন্য দায়িত্ব পান।

কিন্তু এত সকল কাজ করার জন্য দীর্ঘ অভিজ্ঞতা এবং অসাধারণ দক্ষতার প্রয়োজন। সেই সাথে প্রয়োজন অনেক সময়। কিন্তু মোঃ কামাল ইসমাইল এত পরিশ্রম করেও কোন পারিশ্রমিক নেননি।

এমনকি তখনকার রাজা ফাহাদ এবং বিন লাদেন চেষ্টা করেও তার তৈরি নকশা এবং নির্মাণ কাজের জন্য এক পয়সাও তাকে দিতে পারেনি।

এ ব্যাপারে মক্কার মসজিদ নকশার প্রকৌশলী কামাল ঈসমাইল বলেন, ” আমি কি জন্য পৃথিবীর সবচাইতে পবিত্র জায়গায় কাজ করার জন্য টাকা কিংবা পয়সা নিব। তাহলে আমি শেষ বিচারের দিনে আল্লাহকে কি জবাব দেব?

মোঃ কামাল ইসমাইলের পুরো জীবনে তিনি আল্লাহর প্রতি ভরসা এবং বিশ্বাস রেখেছিলেন। তিনি সবসময় তার ব্যক্তিগত বিষয় গুলোকে গোপন রাখতে পছন্দ করতেন। সেজন্য তিনি দিনের বেশিরভাগ সময় আল্লাহ তায়ালার ইবাদত করে কাটাতেন।

আরোও মজার ব্যাপার হচ্ছে তিনি যখন মক্কার মসজিদ আল হারাম ও মসজিদ আন-নাবাওয়ি ডিজাইন এবং রিস্ট্রাকচারের কাজ শুরু করেন তখন তার বয়স ইতিমধ্যে ৮০ পার হয়ে গেছে।

মক্কায় মসজিদের নকশা করেও যিনি ১ টাকা নেননি সৌদি বাদশার থেকে

তিনি তার বাকি জীবন এত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে কাটিয়ে দেন এবং সেটা সম্পর্কে গণমাধ্যম কিছুই জানে না।

মোহাম্মদ কামাল ইসমাইল বিয়ে করেন ৪০ বছর বয়সে। তার স্ত্রী একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেওয়ার পরে মারা যান। স্ত্রী মারা যাওয়ার পরে মোহাম্মদ কামাল ইসমাইল কখনো বিয়ে করেননি। তিনি ১০০ বছর বয়স পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন।

মসজিদ আল-হারাম ও আন নাবাওয়ির অসাধারণ নির্মাণে যে উপাদান গুলো ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলো ছিল খুবই দুষ্প্রাপ্য বস্তু।

আপনি যদি কখনো এই জায়গায় গিয়ে থাকেন তাহলে দেখবেন সৌদি আরবের তাপমাত্রা যত বেশি থাকুক না কেন আল হারাম মসজিদের মেঝে স্পর্শ করলে সেটি ঠান্ডা অনুভূত হয়।

এর কারণ হচ্ছে এতে সাদা মার্বেল ব্যবহার করা হয়েছে। এই স্নো হোয়াইট মার্বেল খুবই দুষ্প্রাপ্ত এবং সেটি আনা হয় লেবানন থেকে।

মক্কার মসজিদ নির্মাণের জন্য ডঃ কামাল ইসমাইল গ্রিস থেকে আরেকটি দুর্লভ মার্বেল পাথর আনেন। যেটি কিনার সাধারন সাদার চাইতে অনেক বেশি উজ্জ্বল। সেই সাথে গরম আবহাওয়ায় ঘর অনেক ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। সৌদির বাদশা মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু সময় এই স্নো হোয়াইট মার্বেল পাথর ব্যবহার করতে বলেন।

মসজিদ আল-হারাম ইসলামের অন্যতম পবিত্র স্থান। সাধারণ সময়ে এখানে প্রায় ৮ লক্ষ ২০ হাজার মুসলমানকে স্থান দেওয়া সম্ভব হয়। তবে হজের সময় এখানে ১০ লাখেরও বেশি মুসল্লি একত্রিত হতে পারে।

দুই দিনেই প্রাণ কেড়ে নিতে পারে মাংসখেকো ব্যাকটেরিয়া। বিস্তারিত জানতে এখানে প্রবেশ করুন।